মাদার ট্রেসার নোবেল শান্তি পুরস্কার
মাদার ট্রেসার নোবেল শান্তি পুরস্কার :
![]() |
মাদার ট্রেসার নোবেল শান্তি পুরস্কার |
Mother Tracer Nobel Peace Prize
১৯৯১ সালের ১১ জুন। নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন মাদার তেরেসা।মাদার টেরেসার আসল নাম আঞ্জেজি গনসে বোজাক্সহিউ (Anjezë Gonxhe Bojaxhiu)। তিনি একজন আলবেনীয়-ভারতীয় রোমান ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী। ১৯১০ সালের ২৬শে আগস্ট স্কোপিয়েতে (তৎকালীন অটোমান সাম্রাজ্য, বর্তমানে উত্তর মেসিডোনিয়া) জন্মগ্রহণ করেন।
প্রাথমিক জীবন ও ভারতে আগমন :
মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করে আয়ারল্যান্ডের সিস্টার্স অফ লোরেটো (Sisters of Loreto) সংস্থায় যোগ দেন। এরপর ১৯২৯ সালে তিনি ভারতে আসেন এবং দার্জিলিংয়ে সন্ন্যাসিনী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৩১ সালে তিনি প্রথম সন্ন্যাসিনী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং 'টেরেসা' নাম গ্রহণ করেন। এরপর দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি কলকাতার ‘সেন্ট মেরিস হাই স্কুল’ শিক্ষকতা করেন।
‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’ প্রতিষ্ঠা :
কলকাতার বস্তিগুলিতে দরিদ্র ও অসুস্থ মানুষের দুর্দশা দেখে মাদার টেরেসার মন গভীরভাবে বিচলিত হয়। ১৯৪৬ সালে তিনি ‘কল উইদিন আ কল’ (Call within a Call) নামে একটি ‘ঐশ্বরিক আহ্বান’ অনুভব করেন, যা তাঁকে কনভেন্টের আরামদায়ক জীবন ছেড়ে দরিদ্র-সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে উৎসাহিত করে। ১৯৪৮ সালে তিনি সনাতন লোরেটো পোশাক ত্যাগ করে নীল পাড়ের একটি সাধারণ সাদা সুতির শাড়ি পরিধান করে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৫০ সালের ৭ই অক্টোবর মাদার তেরেসা ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’ (Missionaries of Charity) নামে একটি ধর্মীয় সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংঘের প্রধান কাজ ছিল ‘দরিদ্রতমদের মধ্যে দরিদ্র’ মানুষদের সেবা করা। এটি কলকাতা থেকে শুরু করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্কুল, হাসপাতাল, কুষ্ঠরোগীদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র এবং মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের জন্য আশ্রয়স্থল গড়ে তোলে।
পুরস্কার ও সম্মান :
মাদার তেরেসার নিঃস্বার্থ সেবা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি লাভ করে। তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ১৯৬২ সালে ভারতের ‘পদ্মশ্রী’ উপাধি
- ১৯৭৯ সালে ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার’
- ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’
মৃত্যু ও উত্তরাধিকার :
দীর্ঘ ৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি দরিদ্র, অসুস্থ, অনাথ এবং মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের সেবা করেছেন। ১৯৯৭ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর কলকাতার ‘মাদার হাউসে’ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর, ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’ ৯০টিরও বেশি দেশে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
২০১৬ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর পোপ ফ্রান্সিস তাঁকে ‘সন্ত’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
মাদার তেরেসা ছিলেন মানবসেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন দরিদ্র ও অসহায়দের জন্য। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি মানবতার প্রতীক হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
--------xx-------
খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ - মহান আলেকজান্ডার, গ্রীক বীর ও সম্রাট।
১৯৩৭ - ভারতীয় বাঙালি চিত্রশিল্পী ও নকশাকার গণেশ পাইন।(মৃ.২০১৩)
১৯৭০ - লীলা নাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী। (জ. ১৯০০)
১৯৬২ - ছবি বিশ্বাস, ভারতীয় বাঙালি অভিনেতা। (জ.১৩/০৭/১৯০০)
১৯৯৭ - মিহির সেন, বাঙালি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দূরগামী সাঁতারু। (জ.১৫/১১/১৯৩০)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন