মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ার-এর জন্মদিন
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ার-এর জন্মদিন
![]() |
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ার-এর জন্মদিন |
Martin Luther King Jr.'s Birthday
১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি। আজকের দিনে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ার আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন আমেরিকান ব্যাপটিস্ট মন্ত্রী এবং মানবাধিকার কর্মী। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের অবসান ও আফ্রিকান-আমেরিকানদের জন্য সমান নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের একজন প্রধান পথিকৃৎ। তাঁকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমেরিকান নেতা হিসেবে গণ্য করা হয়।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন :
১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি জর্জিয়ার আটলান্টায় মাইকেল লুথার কিং জুনিয়র নামে তার জন্ম হয়। পরে তার নাম পরিবর্তন করে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র রাখা হয়। তার বাবা এবং মায়ের দিকের দাদু দুজনেই ব্যাপটিস্ট যাজক ছিলেন এবং তিনিও সেই পথ অনুসরণ করেন।
তাঁর শিক্ষাজীবন :
তিনি মোরহাউস কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক হন এবং বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধর্মতত্ত্বে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন:
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ১৯৬৮ সালে তার হত্যা পর্যন্ত তিনি আমেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন। তিনি মহাত্মা গান্ধীর অহিংস প্রতিরোধের দর্শন দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ারের নেতৃত্বে পরিচালিত উল্লেখযোগ্য আন্দোলন গুলি হল :
১) মন্টগোমারি বাস বয়কট :
১৯৫৫-১৯৫৬ মন্টগোমারি বাস বয়কট আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি লাভ করেন এবং এর ফলস্বরূপ সুপ্রিম কোর্ট বাসে বর্ণবৈষম্যকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে।
২) এস সি এল সি (SCLC) প্রতিষ্ঠা:
১৯৫৭ সালে তিনি সাউদার্ন ক্রিশ্চিয়ান লিডারশিপ কনফারেন্স (SCLC) প্রতিষ্ঠা করেন, যা আফ্রিকান-আমেরিকানদের জন্য পূর্ণ সমতা অর্জনে অহিংস প্রতিবাদের প্রচার করে।
৩) ওয়াশিংটন মার্চ (১৯৬৩):
১৯৬৩ সালে ওয়াশিংটন ডি.সিতে তাঁর ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ (I Have a Dream) নামক এই ঐতিহাসিক ভাষণ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই ঐতিহাসিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি বিশ্বব্যাপী জাতিগত বৈষম্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ফলাফল :
তাঁর এই আন্দোলনের ফলে ১৯৬৪ সালে সিভিল রাইটস অ্যাক্ট (Civil Rights Act, 1964) এবং ১৯৬৫ সালে ভোটাধিকার আইন (Voting Rights Act, 1965) প্রণীত হয়, যা কাগজে-কলমে আমেরিকা থেকে বর্ণবাদ দূর করতে সাহায্য করে।
নোবেল শান্তি পুরস্কার:
অহিংস প্রতিরোধের মাধ্যমে জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণে তার অবদানের জন্য ১৯৬৪ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি সর্বকনিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের মৃত্যু:
১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল জেমস আর্ল রে নামক আততায়ীর গুলিতে তিনি মেম্ফিস, টেনেসি-তে নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর পর মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ার জন্মদিন (১৫ জানুয়ারি) আমেরিকায় জাতীয় ছুটিদিন (Martin Luther King Jr. Day) হিসাবে পালিত হয়।
মার্টিন লুথার কিং এর উক্তি :
“আমি ঠিক করেছি ভালোবাসাকে আঁকড়ে থাকবো। বয়ে বেড়ানোর জন্য ঘৃণা বড্ড বেশি ভারী।”
— মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র তার দৃঢ় বিশ্বাস, অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য এবং অহিংস প্রতিবাদের মাধ্যমে আমেরিকান সমাজে এক গভীর পরিবর্তন এনেছিলেন এবং বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।--------xx-------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন