রাকেশ শর্মার মহাকাশ অভিযান
রাকেশ শর্মার মহাকাশ অভিযান
Rakesh Sharma's space mission
ভারতের প্রথম মহাকাশ অভিযান
১৯৮৪ সালের ২ এপ্রিল। ভারতের প্রথম মহাকাশযাত্রী রাকেশ শর্মা ইতিহাস সৃষ্টি করেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের ইন্টারকসমস কর্মসূচি-এর মাধ্যমে। তাঁর এই অভিযান কেবল ভারতই নয়, সমগ্র এশিয়ার জন্য একটি মাইলফলক ছিল।আরও পড়ুন : ভারতের দ্বিতীয় মহাকাশ যাত্রী
মিশনের মূল তথ্যাবলি
মিশনের নাম: সয়ুজ T-11 (ইন্টারকসমস-মিশন)উৎক্ষেপণ তারিখ: ২ এপ্রিল ১৯৮৪
উৎক্ষেপণ স্থান: বাইকোনুর কসমোড্রোম, কাজাখস্তান (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন)
মহাকাশযান: সয়ুজ T-11
লক্ষ্য: স্যালিউট ৭ স্পেস স্টেশনে গবেষণা
মহাকাশচারী দলের সদস্য:
ভারতে ফিরে আসা: ১১ এপ্রিল ১৯৮৪
- ১) ইউরি মালিশেভ (সোভিয়েত কমান্ডার)
- ২) গেনাদি স্ত্রেকালভ (সোভিয়েত ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার)
- ৩) রাকেশ শর্মা (ভারতীয় গবেষক-মহাকাশচারী)
ভারতে ফিরে আসা: ১১ এপ্রিল ১৯৮৪
মিশনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি
১. ইন্দিরা গান্ধীর প্রশ্ন :
মহাকাশে থাকাকালীন, তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী রাকেশ শর্মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “মহাকাশ থেকে ভারত কেমন দেখায়?”রাকেশ শর্মার উত্তর :
“সারে জাহা সে আচ্ছা” (পৃথিবীর সেরা দেশ)।”—এই উক্তি ভারতজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
২. স্যালিউট ৭-এ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা:
রাকেশ শর্মা ৪৩টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা সম্পন্ন করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:- ১) ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG) ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা।
- ২) ভারতীয় যোগব্যায়াম (যোগাসন) মহাকাশে প্রয়োগ—প্রথমবারের মতো মহাকাশে যোগাভ্যাসের রেকর্ড।
- ৩) মাল্টিব্যান্ড স্পেকট্রোগ্রাফি ব্যবহার করে ভারতীয় ভূখণ্ডের ছবি তোলা।
৩. ভারত-সোভিয়েত সহযোগিতা:
এই মিশন ছিল সোভিয়েত-ভারত মৈত্রীর প্রতীক। সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করেছিল, আর ভারত বৈজ্ঞানিক ডেটা শেয়ার করেছিল।প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি :
রাকেশ শর্মাকে স্টার সিটি, মস্কোতে কঠোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল:- ১) জিরো-গ্র্যাভিটি অভিযোজন (বিমান-ভিত্তিক প্যারাবোলিক ফ্লাইটে)।
- ২) সয়ুজ ক্যাপসুল ও স্যালিউট স্টেশনের সিস্টেম সম্পর্কে প্রশিক্ষণ।
- ৩) জরুরি অবস্থা মোকাবিলার ড্রিল (যেমন: অক্সিজেন লিক, আগুন নিয়ন্ত্রণ)।
রাকেশ শর্মার সম্মাননা ও প্রাপ্তি :
🔯 রাকেশ শর্মা ভারতের প্রথম মহাকাশচারী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।🔯 তাঁর মিশন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং পরবর্তীতে ISRO-র মানব মহাকাশযান কর্মসূচি (গগনযান) অনুপ্রাণিত করে।
🔯 তিনি অশোক চক্র (ভারতের সর্বোচ্চ শান্তিকালীন বীরত্ব পুরস্কার) পান।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন