ক্লিওপেট্রা সিনেমার মুক্তি
ক্লিওপেট্রা সিনেমার মুক্তি
Cleopatra movie Release
১৯৬৩ সালের ১২ই জুন। জোসেফ লিও ম্যাংকাভিৎস পরিচালিত এলিজাবেথ টেলের ও রিচার্ড বাটন অভিনীত বিখ্যাত ক্লিওপেট্রা ছবির মুক্তি ঘটে। এই ছবিটি চারটি অস্কার পুরস্কার পেয়েছিল। চলচ্চিত্রটি মিশরের রানী ক্লিওপেট্রা-এর জীবন, তার সাথে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার ও সেনাপতি মার্ক অ্যান্টনি-এর প্রেম ও রাজনৈতিক জোট, এবং তার ট্র্যাজিক পরিণতি দেখানো হয়েছে। এটি প্রাচীন বিশ্বের এক অসাধারণ নারীর শক্তি, কূটনীতি ও প্রেমের গল্প।‘ক্লিওপেট্রা’ (১৯৬৩) হল একটি আমেরিকান মহাকাব্যিক ঐতিহাসিক ড্রামা চলচ্চিত্র, যা মিশরীয় রানী ক্লিওপেট্রা সপ্তমের জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে। এটি মুক্তির সময়কার সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল এবং এর নির্মাণে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়।
ক্লিওপেট্রা সিনেমার মুক্তির তারিখ:
এই ছবিটি ১৯৬৩ সালের ১২ জুন নিউ ইয়র্ক সিটির রিভোলি থিয়েটারে প্রিমিয়ার হয়েছিল। প্রায় ১০,০০০ দর্শক বাইরে জড়ো হয়েছিল এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে।
পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী:
- পরিচালক: জোসেফ এল. মানকিউইচ (Joseph L. Mankiewicz)।
- প্রধান চরিত্রে:
- এলিজাবেথ টেইলর (Elizabeth Taylor) - ক্লিওপেট্রা চরিত্রে।
- রিচার্ড বার্টন (Richard Burton) - মার্ক অ্যান্টনি চরিত্রে।
- রেক্স হ্যারিসন (Rex Harrison) - জুলিয়াস সিজার চরিত্রে।
গল্প সংক্ষেপ:
মিশরের তরুণী রানী ক্লিওপেট্রা সপ্তমের সংগ্রামকে কেন্দ্র করে ছবিটি আবর্তিত হয়। তিনি রোমান সাম্রাজ্যের সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। চলচ্চিত্রের মূল গল্পে ক্লিওপেট্রা এবং রোমান সেনাপতি জুলিয়াস সিজার ও পরে মার্ক অ্যান্টনির মধ্যেকার প্রেম এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। ক্লিওপেট্রা সিজারের সাথে বিশ্ব শাসনের স্বপ্ন দেখেন এবং তাদের একটি পুত্র সন্তানও হয়। পরে সিজারের মৃত্যুর পর মার্ক অ্যান্টনি ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং তিনিও ক্লিওপেট্রার প্রতি আকৃষ্ট হন। অ্যান্টনি ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করেন, যা রোমে বিতর্কের সৃষ্টি করে। এই ঘটনার ফলে অক্টাভিয়ান (সিজারের দত্তক পুত্র) মিশর আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। অ্যাক্টিয়ামের যুদ্ধে অক্টাভিয়ানের বাহিনী অ্যান্টনিকে পরাজিত করে। ক্লিওপেট্রা মারা গেছেন এই ভুল খবর পেয়ে অ্যান্টনি আত্মহত্যা করেন, এবং এর ফলস্বরূপ ক্লিওপেট্রাও একই পথ বেছে নেন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- 🎞️ চলচ্চিত্রটি কার্লো মারিয়া ফ্রানজেরোর ১৯৫৭ সালের বই "দ্য লাইফ অ্যান্ড টাইমস অফ ক্লিওপেট্রা" এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক উৎস থেকে নেওয়া হয়েছে।
- 📽️ ছবিটির নির্মাণে বিলম্ব, স্থান পরিবর্তন, চিত্রনাট্যের পুনঃলিখন এবং পরিচালক পরিবর্তন (রুবেন মামুলিয়ানকে জোসেফ এল. মানকিউইচ প্রতিস্থাপন করেন) সহ অনেক সমস্যা দেখা গিয়েছিল।
- 🎬 ছবির সেটে এলিজাবেথ টেইলর এবং রিচার্ড বার্টনের মধ্যেকার বাস্তব জীবনের সম্পর্কও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
সিনেমাটির কিছু বিশেষ দিক:
🥇 ব্যয়বহুল প্রযোজনা: এটি তাঁর সময়ের সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে একটি, যার বাজেট প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ডলার (১৯৬৩ সালে)।
🥈 পুরস্কার: এটি ৪টি অস্কার জিতেছে, including Best Cinematography and Best Visual Effects.
🥉 বিতর্ক: চলচ্চিত্রটির পিছনে এলিজাবেথ টেইলর ও রিচার্ড বার্টন-এর বাস্তব জীবনের প্রেমকাহিনী মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
‘ক্লিওপেট্রা’ একটি বিশাল বাজেটের চলচ্চিত্র হওয়া সত্ত্বেও বক্স অফিসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করে, যদিও এটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এই সিনেমাটি তার দর্শনীয় সেট ডিজাইন, জমকালো পোশাক এবং ঐতিহাসিক ড্রামার জন্য আজও স্মরণীয়।
--------xx-------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন