এপিজে আব্দুল কালামের প্রয়াণ দিবস
এপিজে আব্দুল কালামের প্রয়াণ দিবস
APJ Abdul Kalam’s Death Anniversary
২০১৫ সালের ২৭ জুলাই। এপিজে আব্দুল কালামের প্রয়াণ দিবস। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, বিজ্ঞানী এবং একজন মহান শিক্ষক এপিজে আব্দুল কালামের প্রয়াণ দিবস। ২০১৫ সালের ২৭শে জুলাই মেঘালয়ের শিলং-এ অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টে (IIM) একটি বক্তৃতা দেওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।তাঁর পূর্ণ নাম ছিল আভুল পাকির জয়নুলাবেদিন আব্দুল কালাম (Avul Pakir Jainulabdeen Abdul Kalam)। তিনি ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা জয়নুল-আবেদিন ছিলেন একজন নৌকামালিক এবং মা আশিয়াম্মা ছিলেন গৃহবধূ।
📚 তিনি তামিলনাড়ুর ‘শোয়ার্টজ হাইস্কুল’ থেকে স্কুলজীবন শেষ করেন।
📚 সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক হন।
📚 ১৯৫৫ সালে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (MIT) থেকে এয়ারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিগ্রি অর্জন করেন। এই পড়ার খরচ জোগাতে তাঁর বড় বোন নিজের সোনার গহনা বিক্রি করে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন।
শিক্ষাজীবন :
📚 শৈশবে তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন এবং পত্রিকা বিলি করে সংসারে সহায়তা করতেন, একই সাথে নিষ্ঠার সাথে পড়াশোনাও চালিয়ে যেতেন।📚 তিনি তামিলনাড়ুর ‘শোয়ার্টজ হাইস্কুল’ থেকে স্কুলজীবন শেষ করেন।
📚 সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক হন।
📚 ১৯৫৫ সালে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (MIT) থেকে এয়ারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিগ্রি অর্জন করেন। এই পড়ার খরচ জোগাতে তাঁর বড় বোন নিজের সোনার গহনা বিক্রি করে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন।
কর্মজীবনের প্রারম্ভ
বিজ্ঞানী হিসেবে অবদান:
- স্নাতক শেষ করার পর তিনি ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (DRDO) একজন বিজ্ঞানী হিসেবে যোগদান করেন।
- পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনে (ISRO) কাজ করেন।
- তিনি ভারতের প্রথম স্বনির্ভর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প SLV-III-এর প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন।
- ভারতের অসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি এবং সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে তিনি গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন।
- ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নের কাজে তাঁর অনবদ্য অবদানের জন্য তাঁকে ‘ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মানব’ বা ‘মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ বলা হয়।
- ১৯৯৮ সালে পোখরান-২ পরমাণু বোমা পরীক্ষায় তিনি প্রধান সাংগঠনিক, প্রযুক্তিগত ও রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে:
- ২০০২ সালে তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) এবং বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে তিনি ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
- ২০০২ সালের ২৫ জুলাই থেকে ২০০৭ সালের ২৫ জুলাই পর্যন্ত তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।
- তিনি 'জনগণের রাষ্ট্রপতি' (People's President) হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তাঁর সরলতা, সততা এবং সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার অসাধারণ ক্ষমতার জন্য।
সম্মান ও পুরস্কার:
- ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছিলেন।
- অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, ভন ব্রাউন পুরস্কার, অনারারি ফেলো, রামানুজন পুরস্কার, বীর সাভারকর পুরস্কার, রাজা দ্বিতীয় চার্লস পদক, ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার।
- ৪০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছিলেন।
লেখক ও শিক্ষক হিসেবে:
- রাষ্ট্রপতিত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি শিক্ষাবিদ, লেখক ও জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন।
- তিনি ছিলেন একজন অনুপ্রেরণাদায়ক লেখক। তাঁর আত্মজীবনী ‘উইংস অফ ফায়ার’ (Wings of Fire) সহ ‘ইন্ডিয়া ২০২০’, ‘ইগনাইটেড মাইন্ডস’ ইত্যাদি গ্রন্থগুলি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
- নিজের মৃত্যুদিনে ছুটি ঘোষণা না করে সেদিনকে কাজের দিন হিসেবে পালন করার কথা তিনি লিখেছিলেন, যা তাঁর কর্মনিষ্ঠা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসার পরিচায়ক।
এপিজে আব্দুল কালাম ছিলেন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, যিনি তাঁর জীবন ও কাজের মাধ্যমে ভারতের উন্নতি এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে গিয়েছেন। তাঁর জীবন আজও লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
--------xx-------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন