জ্যোতি বসুর জন্মদিন
জ্যোতি বসুর জন্মদিন
![]() |
জ্যোতি বসুর জন্মদিন |
Jyoti Basu's birthday
১৯১৪ সালের ৮ জুলাই। জ্যোতি বসুর জন্মদিন। ১৯১৪ সালের আজকের দিনে তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন। এরপর দীর্ঘ ২৩ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি এই পদে আসীন ছিলেন।
জন্ম ও বংশ পরিচয় :
জ্যোতি বসুর জন্ম ১৯১৪ সালের ৮ জুলাই কলকাতায়, ৪৩/১ হ্যারিসন রোডের (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) বাসভবনে। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল জ্যোতিরিন্দ্র বসু, এবং ডাক নাম ছিল ‘গনা’।তাঁর বাবা ছিলেন ডাক্তার নিশিকান্ত বসু এবং মা ছিলেন হেমলতা বসু (হেমন্তকুমারী বসু)। তাঁর পরিবার ছিল প্রগতিশীল ও শিক্ষিত, যা তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাধারায় প্রভাব ফেলেছিল।
তাঁদের আদি নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বারদী গ্রামে।
লন্ডনে থাকাকালীনই তিনি কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে প্রভাবিত হন এবং দেশে ফিরে এসে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। জ্যোতি বসু ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের এক অগ্রগণ্য নেতা হিসেবে স্বীকৃত এবং তাঁর নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের এক দীর্ঘ অধ্যায় রচিত হয়।
শিক্ষাজীবন:
প্রাথমিক শিক্ষা:
জ্যোতি বসুর শিক্ষাজীবন শুরু হয় কলকাতার ধর্মতলার লরেটো কিন্ডারগার্টেন স্কুলে (১৯২০ সালে)। এরপর তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখানে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।উচ্চশিক্ষা:
সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে সিনিয়র কেমব্রিজ ও ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স নিয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৩৫ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।বিদেশ যাত্রা :
১৯৩৫ সালে তিনি আইন নিয়ে পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে যান। লন্ডনের মিডল টেম্পল থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করেন। লন্ডনে থাকাকালীন তিনি সেখানকার ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে গঠিত ‘লন্ডন মজলিশ’-এর প্রথম সম্পাদক হন। ১৯৪০ সালের ১ জানুয়ারি তিনি ভারতে ফিরে আসেন।রাজনৈতিক জীবন :
১৯৩০-৩১ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়া কালীন দুটি ঘটনা তাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। একটি চট্টগ্রামে মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে অস্ত্রাগার দখল এবং ১৯৩০ সালে গান্ধীজীর অনশন। মনের কষ্টে স্কুল কামাই করে বাবার সঙ্গে চেম্বারে চলে গেছিল। এ বছরই সুভাষ বসুর আফটারলনি মনুমেন্ট (আজকের শহীদ মিনার) এ ভাষণ শুনতে গিয়ে পুলিশের লাঠিপেটা কবলে পড়েন। তাঁর কথায়, “সেটাই বোধহয় রাত শক্তির বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ।” (‘যতদূর মনে পড়ে’, পৃষ্ঠা নম্বর ৪), ষষ্ঠ মুদ্রণ : অক্টোবর, ২০০৪।
ব্যক্তিগত জীবন:
১৯৪০ সালে কমলা বসু (কমলা নায়গাঁওকর)-কে বিয়ে করেন। তাঁদের দুই পুত্র: চন্দন বসু (সাংবাদিক) ও সুমিত বসু (চিকিৎসক)।রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে পারিবারিক জীবন কিছুটা সীমিত ছিল, তবে তিনি পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।
ব্যক্তিগতভাবে খুব সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন এবং শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল।
সতের দিনের দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি ৯৫ বছর বয়সে ভারতীয় সময় সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে জ্যোতি বসুর জীবনাবসান হয়।
--------xx-------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন